মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান
যখন আবু বকর (রাঃ)খলিফা নিযুক্ত হলেন, তখন ভোরে কয়েকটি চাদর নিয়ে বাজারের দিকে যেতে উদ্যত হলেন।
উমর (রাঃ) তা দেখে জিজ্ঞেস করলেন কোথায় যাওয়ার ইচ্ছা করেছেন? উত্তরে আবু বকর (রাঃ) বললেন, আমাকে তো মুসলমানদের কাজে ব্যস্ত করে দেওয়া হয়েছে, পরিবারের খাবার দাবারের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছি।
তারপর উমর (রাঃ) বায়তুল মালের খাজাঞ্চি আবু উবায়দা বিন জাররা (রাঃ)’র নিকট গেলেন। এবং বিস্তারিত আলোচনা করলেন।
এরপর আবু উবায়দা বিন জাররা (রাঃ) আবু বকর (রাঃ)কে বললেন, একজন সাধারণ মানুষ তার পরিবার চালাতে যত টাকার দরকার পড়ে আপনাকে সেই পরিমাণ ভাতা দেওয়া হবে। এরপর থেকে একজন সাধারণ মানুষ পরিবার চালাতে যে পরিমাণ টাকার দরকার সে পরিমাণ ভাতা খলিফা আবু বকর (রাঃ)’র জন্য নির্ধারিত করা হল।
একবার আবু বকর (রাঃ)’র সহধর্মিণী উম্মে রুমান (রাঃ)স্বামী আবু বকর (রাঃ)’র কাছে আব্দার করলেন যে,কিছু মিষ্টান্ন খেতে মন চাইতেছে। আবু বকর (রাঃ)বললেন, আমার নিকট তো এমন কোনো পয়সা নেই যে, তা দিয়ে আমি তোমাকে মিষ্টান্ন খাওয়াতে পারি। স্ত্রী বললেন, দৈনিক খরচ থেকে যদি আমরা সামান্য করে বাচিয়ে রাখি তা দিয়ে মিষ্টি আনা যাবে।
স্ত্রী কিছু দিনের পয়সা জমিয়ে স্বামী আবু বকর (রাঃ)কে মিষ্টান্ন আনতে দিলেন। পয়সা গুলো হাতে নিয়ে খলিফা আবু বকর (রাঃ) বললেন, যেহেতু আমাদের দৈনিক খরচ মিটিয়ে ও এই পয়সা গুলো জমানো গেছে তাহলে বুঝা গেলো যে, এই পয়সা গুলো ছাড়া ও আমাদের সংসার চলবে। আমরা এই পয়সা গুলো বায়তুল মাল থেকে অতিরিক্ত নিচ্ছি।এই বলে তিনি পয়সা গুলো নিয়ে বায়তুল মালের খাজাঞ্চির কাছে দিয়ে বললেন এই পয়সা গুলো আমি বায়তুল মাল থেকে অতিরিক্ত নিচ্ছি। এই গুলো ছাড়াও আমার সংসার চলে।
আগামীতে আমার ভাতা থেকে এই পরিমাণ পয়সা কমিয়ে দিবে।
ইন্তেকালের পূর্বে আবু বকর (রাঃ) হজরত আয়েশা (রাঃ)কে বললেন, দুধাল উটনি,তরকারির পেয়ালা এবং খলিফা হবার দরুন যে চাদরটি আমাকে দেওয়া হয়েছিল তা আমার ইন্তেকালের পর উমর (রাঃ)’র নিকট পৌঁছে দিও।
এই হচ্ছে ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবুবকর (রাঃ)’র রাষ্ট্রীয় অর্থ রক্ষণাবেক্ষণ করার পদ্ধতি।
আজও যদি রাষ্ট্রের কোনো দায়িত্বশীল রাষ্ট্রের অর্থ রক্ষণাবেক্ষণ করতে চায় তাহলে ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবুবকর( রাঃ)’র আদর্শ তার জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।