কৃষ্ণচূড়ার লাল ফুলে এখন প্রকৃতি রঙিন

Spread the love

আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া মিনাজ, নবীনগর ( ব্রাহ্মণবাড়িয়া ) প্রতিনিধি ঃ-

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে ‘গন্ধে উদাস হাওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরি’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো অনেকেই বাংলা কবিতা-গানে উপমা হিসেবে নানা ভঙ্গিমায় এনেছেন কৃষ্ণচূড়াকে। নবীনগরের পৌর রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে ও গুরুত্বপূর্ণ অফিস, বাসভবনে অসংখ্য কৃষ্ণচূড়া গাছ ডাল-পালা ছাড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এসব গাছে-গাছে ফুটে থাকা লাল ফুল পুরো পৌর শহরকে রাঙিয়ে তুলেছে।এ পুষ্পবৃক্ষটি দেশের গ্রামীণ জনপদের পাশাপাশি শহরের পথে-প্রান্তরেরও শোভা বর্ধন করে যাচ্ছে। গ্রীষ্মে যখন এই ফুল ফোটে তখন প্রকৃতি প্রেমীদের হাতছানি দেয়। রক্তরাঙা ফুল কৃষ্ণচূড়ার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্য গ্রামের সবুজ প্রান্তর, আঁকাবাঁকা মেঠোপথ ও বাড়ির আঙ্গিনা ছাড়িয়ে রাঙিয়ে তুলেছে নবীনগরের পথ-প্রান্তর।
কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কার। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত এ বৃক্ষ যেন এখন বাঙালির ঐতিহ্যের একটা অংশ হয়ে গেছে সবার অলক্ষে। এদেশে এসে পরিচিত হয়েছে নতুন নামে। অনেকেই মনে করেন শ্রীকৃষ্ণের নাম থেকে এ গাছ ও ফুলের নাম হয়েছে কৃষ্ণচূড়া। এর সবচেয়ে বড় খ্যাতি হচ্ছে মোহনীয় রক্তিম আভা। প্রকৃতির শোভা বর্ধনকারী এ বৃক্ষের উচ্চতা তেমন একটা বেশি হয় না। সর্বোচ্চ ১২ মিটার পর্যন্ত উপরে উঠলেও তার শাখা-প্রশাখা বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত থাকে। কৃষ্ণচূড়া পুরো গ্রীষ্ম ও বর্ষায় প্রকৃতিকে মাতিয়ে রাখে। বিভিন্ন দেশে এই ফুল বিভিন্ন সময়ে ফুটলেও বাংলাদেশে ফুটে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত। এপ্রিলে গ্রীষ্মের শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই সবুজ পাতার মাঝে বেরিয়ে আসতে থাকে লাল রঙের কৃষ্ণচূড়া ফুল। দূর থেকে দেখে মনে হয়-সবুজের বুকে হয়তো আগুন লেগেছে। নবীনগরের এখন রাস্তার মোড়ে-মোড়ে এবং বিভিন্ন ভবন ও অফিস পাড়ায় গাছে গাছে কৃষ্ণচূড়ার লালআভা সৃষ্টি করেছে বৈচিত্যময় পরিবেশ। এখন (চৈত্রের শুরুতে) নগর, গ্রাম-গঞ্জের দৃশ্যপট মোহনীয় করে তুলেছে রক্তরাঙা কৃষ্ণচূড়া ফুল। গাছের ফুলের দিকে তাকালে চোখ জুড়ে যায়।
ভারত ও পাকিস্তানে কৃষ্ণচূড়া গুলমোহর নামেই পরিচিত, বাংলাদেশে কৃষ্ণচূড়া । নবীনগর পৌর শহরের রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে ও গুরুত্বপূর্ণ অফিস, বাসভবনে অসংখ্য কৃষ্ণচূড়া গাছ ডাল-পালা ছাড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এ ছাড়াও গ্রামীণ জনপদের পথে-প্রান্তরে শোভা বর্ধন করে যাচ্ছে এ বৃক্ষটি। নবীনগর লঞ্চ ঘাট, সরকারি কলেজের শহিদ মিনারের পাশে, বুড়ি নদীর তীরে, আদালত প্রাঙ্গনে, জমিদার বাড়িতে সুর স¤্রাট আলাউদ্দিন খাঁ মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে, লাউর ফতেহপুর স্কুল চত্বরে, শ্যমগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়সহ অন্যান্য স্থানেও দেখা মিলবে রক্তরাঙা ফুলে আচ্ছন্ন কৃষ্ণচূড়া গাছের। কৃষ্ণচূড়া ফুলের রক্তিম জাগরণ পথচারিদের মুহূর্তের জন্য হলেও শিহরণ জাগায় এবং রোদ্দুর দুপুরে কৃষ্ণচূড়ার ছায়া দেয় প্রশান্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *