দীর্ঘদিন সেন্সর বোর্ডে আটকে থাকার অবশেষে সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে প্রয়াত অভিনেতা মাসুম আজিজ অভিনীত ‘মধ্যবিত্ত’। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) পরিচালক তানভীর হাসান হাতে পেয়েছেন ছাড়পত্র। ছবিটি অক্টোবরেই মুক্তি দিতে চান তিনি।
জানা যায়, ছবিটির নামসহ কিছু বিষয় নিয়ে সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে আটকে ছিল এর মুক্তি।
নির্মাতা জানান, সিনেমাটি মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের জীবনাচার ও প্রেমের গল্প নিয়ে তৈরি। এজন্যই নাম রাখা হয়েছে মধ্যবিত্ত। কিন্তু এতেই সেন্সরের আপত্তি। সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা সিনেমার নাম পরিবর্তন করতে বলেছেন। কিছু সংশোধন দিয়েছেন। তিনি দৃশ্যে সংশোধন দিলেও নাম ‘মধ্যবিত্ত’ থাকবে বলে অনুরোধ করে সেন্সর বোর্ডে চিঠি দেন।
অবশেষে তার ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হয়ে ছবিটিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। আর এতেই খুশি নির্মাতা। তিনি বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে সিনেমা বানাতে এসেছি। অনেক ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়েছে। এটি আমার প্রথম সিনেমা। শিল্পচর্চা ও সিনেমাকে ভালোবাসি বলেই সুন্দর ক্যারিয়ারের হাতছানি রেখে শোবিজে কাজ করতে এসেছি। নিজের টাকা খরচ করে সিনেমা বানিয়েছি। খুব কষ্ট পাচ্ছিলাম সিনেমাটি আটকে যাওয়ায়। অবশেষে সেন্সর বোর্ডের সদস্যদের ধন্যবাদ তারা এই নির্মাতার স্বপ্নের মূল্য দিয়েছেন। সবাইকে ধন্যবাদ যারা আমার পাশে ছিলেন।
তানভীর হাসান বলেন, আমার জানামতে এটিই মাসুম আজিজ ভাইয়ের অভিনয় করা সম্পূর্ণ এবং শেষ ছবি। এটির পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। আর কোনো ছবির শুটিং করতে পারেননি। ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে তাকে। বলতে পারেন, মধ্যবিত্তের গল্পটি তাঁকে ঘিরেই।
মাসুম আজিজ ছিলেন একাধারে অভিনয়শিল্পী, চিত্রনাট্যকার ও নাট্যনির্মাতা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থিয়েটারে কাজের মাধ্যমে তার অভিনয়ের শুরু। ১৯৮৫ সালে তিনি প্রথম টিভি নাটকে অভিনয় করেন।
তিনি হুমায়ূন আহমেদের ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’, সালাউদ্দিন লাভলুর ‘তিন গ্যাদা’সহ অসংখ্য টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন।
২০০৬ সালে ‘ঘানি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন মাসুম আজিজ। ‘গহীনে শব্দ’, ‘এই তো প্রেম’, ‘গাড়িওয়ালা’সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এছাড়া সরকারি অনুদানে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘সনাতন গল্প’ পরিচালনা করেছেন। ২০২২ সালে একুশে পদক পেয়েছেন মাসুম আজিজ।