ভারতের আসামে বন্যায় গত ২৪ ঘন্টায় আরও ৬ জনসহ মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮ জনে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় সাড়ে ২৪ লাখ মানুষ। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের অন্তত ৭০ শতাংশ জমি ডুবে গেছে। আতঙ্কে উদ্যান ছেড়ে পালাচ্ছে জীবজন্তু।
শনিবার (৬ জুলাই) আসাম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এএসডিএমএ) এর একজন মুখপাত্র বলেছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ছয়জন ডুবে গেছে বা ভেসে গেছে, তাদের মধ্যে চার শিশু এবং একজন নারী রয়েছেন।
রাজ্যটির সরকারি হিসাব বলছে, আসামের ৩৫টি জেলার মধ্যে বর্তমানে ৩০টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি গুরুতর আকার নিয়েছে। ব্রহ্মপুত্রসহ একাধিক বড় নদীর পানি বইছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। নষ্ট হয়েছে অনেক ফসল।
রাজ্যটিতে বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম বারপেটা, বিশ্বনাথ, কাছাড়, চারাইদেও, চিরাং, দারাং, ধেমাজি, ডিব্রুগড়, গোলাঘাট, জোরহাট, কামরূপ মেট্রোপলিটন, কার্বি আংলং, করিমগঞ্জ, লখিমপুর, মাজুলি, মরিগাঁও, নগাঁও, নলবাড়ি শিবসাগর সনিৎপুর তাম্বুলপুর তিনসুকিয়া এবং উদালগুরি জেলা।
এখনও পর্যন্ত ৪৭ হাজার মানুষকে ত্রাণশিবিরে স্থানান্তরিত করা গেছে। বহু মানুষ এখনও ঘরছাড়া। রাজ্যটির শহরাঞ্চল গুলোও গত ন’দিন ধরে পানির তলায়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আসামের সড়ক, সেতুসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
নিয়ামতিঘাট, গুয়াহাটি, গোয়ালপাড়া, ধুবড়ি ব্রহ্মপুত্র এবং তার উপনদী গুলি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। বরাক নদীর রীতিমতো চোখ রাঙাচ্ছে। গত একমাস ধরে পরিস্থিতি ভয়াবহ, যার ফলে ফসল ধ্বংস ও গবাদি পশুর ক্ষতির পাশাপাশি প্রাণহানি ও পরিকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যটিতে হাজার হাজার মানুষ বন্যার জেরে ঘরছাড়া অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
শোচনীয় অবস্থা আসামের কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের। চলতি মৌসুমে গন্ডার, হরিণসহ ৭৭টি পশুর মৃত্যু হয়েছে। তারমধ্যে অন্তত ৬২টি হগ ডিয়ার। কাজিরাঙা উদ্যানে ১৫ হাজারের বেশি পশু বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। উদ্ধার করা হয়েছে ৯৪টি পশুকে। তারমধ্যে ৫০ টি নিরাপদে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ১১টি পশু চিকিৎসা চলাকালীন মারা গিয়েছে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোতে পরিস্থিতির তত্ত্বাবধানের জন্য মন্ত্রীদের নিয়োগ করা হয়েছে। পাশাপাশি উদ্বেগ প্রকাশ করে আসাম সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷