দেশ পুনর্গঠন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং চুরি হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
১৫ সেপ্টেম্বর, রবিবার ঢাকার স্টেট গেস্ট হাউস যমুনায় একটি উচ্চপর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ সহায়তার আবেদন করেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ রোববার দেশের পুনর্গঠন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার এবং চুরি হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চেয়েছেন।
নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জের বর্ণনা দিয়ে বলেন, তার প্রশাসন অর্থনীতি পুনর্গঠন, সংস্কার ও সচল করতে দ্রুত এগিয়ে এসেছে। এরই মধ্যে আর্থিক খাতে সংস্কার শুরু করেছে এবং বিচার বিভাগ ও পুলিশের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করেছে।
শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় এবং আমাদের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।’ তার মতে, বাংলাদেশে একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে এই আন্দোলন।
প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকার গৃহীত সংস্কার উদ্যোগের একটি রূপরেখা বর্ণনা করেন বলেন, ভোট কারচুপি প্রতিরোধ, বিচার বিভাগ, পুলিশ, বেসামরিক প্রশাসন, দেশের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা এবং সংবিধান সংশোধনের প্রয়াসে তার সরকার দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরেই ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে।
ড. ইউনূস আরও বলেন, তার সরকার আগের স্বৈরাচারী শাসনের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের চুরি করা সম্পদ ফেরত আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দুর্নীতি মোকাবিলায় সরকারের সামনে থাকা চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এত দিন দুর্নীতির সাগরে ছিলাম।’
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের সহকারী সচিব ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধি দল অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তারা জানান, ওয়াশিংটন তার সংস্কার অ্যাজেন্ডাকে সমর্থন করতে পারলে আনন্দিত হবে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, তারা অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালিত সংস্কারের জন্য প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক সহায়তা দিতে আগ্রহী। ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার, বিনিয়োগ, শ্রম সমস্যা, রোহিঙ্গা সংকট এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফর নিয়েও আলোচনা হয়।
বৈঠকে ব্রেন্ট নেইম্যান ছাড়াও মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু, সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ, উপসহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কৌর এবং মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের পরিচালক জেরোড ম্যাসন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করেন।
বৈঠকে আন্তর্জাতিকবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক প্রধান লামিয়া মোর্শেদ, পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।