রংপুর নগরীতে বিক্ষোভকারী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা ও পশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ ৪ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন।
নগরীর পরশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধন রায় হারা ও তার গাড়িচালক সংঘর্ষের সময় নিহত হন। তাদের মরদেহ সিটি করপোরেশন গেটের সামনে পড়েছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
বাকি ২ জন নিহত হলেন যুবলীগ কর্মী খসরু। তার বাড়ি রংপুর নগরীর গুড়াতিপাড়া। অন্যজন মাসুম (৩১) তার বাবার নামসহ বিস্তারিত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রবিবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় শুরু হয় সংঘর্ষ। এতে ৩২ জন আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক আওয়ামী লীগ নেতাসহ দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রমেকের ডেপুডি ডিরেক্টর আক্তারুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘সংঘর্ষে আহত ৩২ জনকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।’
আহত হয়েছেন ৮ সাংবাদিকসহ শতাধিক। গুরুতর আহত অবস্থায় ৯ জনকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অপরদিকে, বদরগঞ্জ উপজেলা সদরে রংপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ডিউক চৌধুরী, বদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র টুটুল চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি সুইট, যুবলীগ নেতা পুলিন চৌধুরীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও মালামাল লুট হয়েছে।
একইভাবে মিঠাপুকুর উপজেলার ইউএনও কার্যালয়, সাবেক এমপি আশিকুর রহমানের বাড়িসহ বেশ কয়েকটি সরকারি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে।
পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন, প্রেসক্লাবের সামনে রাখা ১১টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও নগর জুড়ে ব্যাপক সহিংস ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে, সকাল থেকে আন্দোলনকারীরা রংপুর নগরীর টাউন হল চত্বরে সমবেত হতে থাকে। অপরদিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা নগরীর জাহাজ কোম্পানি এলাকায় অবস্থান নেয়।
বেলা ১১টার দিকে উপয়পক্ষ পরস্পরের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ সিটিবাজার থেকে শুরু করে জাহাজ কোম্পানি এলাকা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।