ওয়াশিংটন সফরে এসে সম্প্রতি মার্কিন আইনসভায় ভাষণ দিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এতে হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল না করা পর্যন্ত গাজায় সামরিক হামলা চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেন তিনি। যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুর এমন শর্তকে ‘অবাস্তব’ বলছে রাশিয়া। রোববার এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ান নিউজ এজেন্সি তাস।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জানিয়েছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল করে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রধান শর্ত হিসেবে নেতানিয়াহুর এই উদ্দেশ্য অবাস্তব।
সাংবাদিকদের নেতানিয়াহু বলেন, ‘এই রক্তপাতের অবসানের কোন সম্ভাবনা এখনও দেখা যাচ্ছে না। নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতির আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় বলেছে যে হামাসকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল না করা পর্যন্ত এটি থামবে না। আমার মতে এবং আমার অনেক সহকর্মীও মনে করে, এটি অসম্ভব একটি প্রচেষ্টা। কারণ মুসলিম বিশ্বসহ বিশ্বজুড়ে হামাসের যথেষ্ট সক্ষমতা এবং যথেষ্ট রয়েছে। একটি বিদ্যমান সংগঠনকে নির্মূল করা এটি অবাস্তব পরিকল্পনা’।
ল্যাভরভ জানান, মধ্যস্থতাকারী হবে কিছু দেশ নতুন সমঝোতা প্রস্তাব তৈরির চেষ্টা করলেও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
গত ৭ অক্টোবরে ইসরাইলি সীমান্ত পেরিয়ে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী আন্দোলন হামাস। এরপর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইল। টানা ৮ মাস ধরে চলা এই বর্বর গণহত্যা থামাতে পৃথিবীজুড়ে দাবি উঠেছে যুদ্ধবিরতির। কিন্তু এতে সায় দিচ্ছে না ইসরাইল।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কিছু আরব দেশ, মিশর এবং কাতার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাজ করছে। তারা ইসরাইলিদের সঙ্গে কিছু বৈঠকও করেছে। আমার মতে, এসব বৈঠক থেকে ফিলিস্তিনিদের বাদ দেওয়া খুব ভালো নয়। বিশেষ করে যেসব বৈঠকে ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে আছে। আমরা (রাশিয়া) এই বিষয়ে ফিলিস্তিনি ঐক্য পুনরুদ্ধারে সহায়তা অব্যাহত রাখব’।
এর আগে মার্কিন আইনসভায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন। বিশ্বজুড়ে ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে যখন প্রতিবাদ হচ্ছে ঠিক সেসময় গাজা যুদ্ধে ‘পুরোপুরি বিজয়’ অর্জন করার অঙ্গিকার করেছেন
নেতানিয়াহু বলেন, ‘হামাস আত্মসমর্পণ করলে, নিরস্ত্র হলে ও সব জিম্মিকে ফিরিয়ে দিলে গাজায় যুদ্ধ শেষ হতে পারে আগামীকালই। কিন্তু হামাস যদি তা না করে, তবে তাদের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করা, গাজায় তাদের শাসনের অবসান ঘটানো ও আমাদের সব জিম্মিকে দেশে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত ইসরায়েল লড়াই চালিয়ে যাবে।’