অগ্নিসন্ত্রাস, ভাঙচুর ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে, বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্র বানাতে ছাত্র আন্দোলনকে সামনে রেখে পরিকল্পিতভাবে হামলা ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করেছে বিএনপি-জামায়াত।
২৫ জুলাই, বৃহস্পতিবার বিকেলে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি হলরুমে স্থানীয় প্রশাসন ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র যারা জঙ্গি উন্থান ঘটিয়েছে তারাই সুসংঘটিতভাবে এ কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে, তারাই এ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে। কোটা আন্দোলনের নামে এ নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। অপরাধী যেই হোক তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে।
তিনি বলেন, শুধু এ জায়গাই নয় সারা দেশের চিত্রই একই রকম। আমার কাছে মনে হচ্ছে এই অগ্নিসংযোগ পেট্রোল দিয়ে না করে গান পাউডার ব্যবহার করেছে। হাসপাতাল ব্যাংক কোনোটাই বাদ যায়নি। এদের উদ্দেশ্য একটাই, কোটা আন্দোলন সামনে দিয়ে ছাত্রদের সামনে এনে রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার প্রয়াস চালাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, কী দুঃসাহস, মুক্তিযোদ্ধার অফিসও তারা ভেঙে দিয়েছে। আমরাও মুক্তিযুদ্ধ করেছি, ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা, ’৬৯ গণআন্দোলন করেছি, আমরা কখনো থানা, বিচারপ্রতি, দলীয় অফিস ভাঙচুর করিনি জানিয়ে সংঘর্ষে পুলিশ বিজিবি সেনা সদস্যদের ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করায় ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ক্রমান্বয়ে দেশ স্বাভাবিক হচ্ছে। কারফিউ শিথিল করছি, আস্তে আস্তে সব নরমাল হয়ে যাবে। তবে যারা এ ঘটনার মদদ দিচ্ছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এর আগে, রংপুরে নাশকতায় ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা পরিদর্শন করতে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। বেলা ১২টায় শিওবাজার এলাকায় বিজিবি সদর দফতরে হেলিকপ্টারে করে পৌঁছান তারা।
সেখান থেকে রংপুর সার্কিট হাউসে গার্ড অব অনার শেষে সংঘর্ষে পুড়ে যাওয়া রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট থানা, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাংলো, ডিসি ডিবি, ডিসি ক্রাইম, নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি এবং আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ঘুরে দেখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় পুলিশ প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন সঙ্গে ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃংখলাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা।
এসময় ঘটনার আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান ও উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন।
পরে বিকেলে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি হলরুমে স্থানীয় প্রশাসন ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, কতখানি দুঃসাহস তাদের এতগুলো সরকারি অফিস এবং মহানগর আওয়ামী লীগ অফিস, জেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা ছাত্রলীগ অফিস ঢুকে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করেছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি, রংপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য জাকির হোসেন, রংপুর-১ এর সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান বাবলু, সংরক্ষিত আসনের এমপি নাসিমা জামান ববি, বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মো. মোবাশ্বের হাসানসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।