ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনসহ নানা কারণে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করেছে রুশ ফেডারেশনের অংশ চেচনিয়া প্রজাতন্ত্র। চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনিতে তাদের জন্য পাঁচটি অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করা হয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে চেচনিয়া প্রজাতন্ত্রের নেতা রমজান কাদিরভ এ ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাস্তুচ্যুত দুই শতাধিক ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে চেচনিয়ায়।
রমজান কাদিরভ বলেছেন, আমাদের তাৎক্ষণিক পরিকল্পনার মধ্যে আছে, চেচেন প্রজাতন্ত্রে একটি ফিলিস্তিনি সম্প্রদায় তৈরি করা, যাতে শরণার্থীরা তাদের জাতীয় পরিচয় রক্ষা করতে পারে।
কাদিরভ জানিয়েছেন,গ্রোজনির দক্ষিণ-পূর্বে গর্নি ক্লিউচ চিলড্রেন রিসোর্টে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের এখন চেচনিয়ার রাজধানীর ভিসাইতোভস্কি জেলার একটি এলাকায় রাখা হবে, যেখানে ২০৯ জন ৪০টি পৃথক ও নতুন অ্যাপার্টমেন্টে বাস করবে।
রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির প্রতিবেদন অনুসারে, রমজান কাদিরভের মা আয়মানি পরিচালিত একটি দাতব্য সংস্থা পাঁচটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন নির্মাণ করেছে চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনিতে। এসব অ্যাপার্টমেন্টে ২০৯ জন আশ্রয় পাবে। তারা এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করবে।
শুক্রবার রমজান কাদিরভ এক বিবৃতিতে এসব অ্যাপার্টমেন্ট বণ্টনসংক্রান্ত ঘোষণায় বলেছেন, সন্তোষজনক আবাসন পাওয়ায় ফিলিস্তিনি ভাই ও বোনদের অভিনন্দন। আমি আশা করি, তাদের আর কোনো দিন যুদ্ধ দেখতে হবে না। তারা এখানে সুখ ও সমৃদ্ধিতে বসবাস করবে।
চেচনিয়ার নেতা জানান, এসব অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণে ছয় মাস সময় লেগেছে। এই সময়ের মধ্যে ৫৫ জন ফিলিস্তিনিকে চাকরি দেওয়া হয়েছে এবং তাদের সন্তানদের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তারা সবাই রাশিয়ায় পড়ালেখা করছে।
আইমানি পরিচালিত আখমত ফাউন্ডেশনের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের দিনে ভবনগুলো উদ্বোধন করা হয়। এই ফাউন্ডেশন তার বাবা আখমত কাদিরভের নামে।
কাদিরভ বলেন, চেচেন জনগণ জানে যুদ্ধের কষ্ট কতটা। আমরা ভয়ানক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। আমরা ক্ষুধা, ঠাণ্ডা এবং প্রিয়জনের মৃত্যু দেখেছি। সুতরাং, ফিলিস্তিনিরা যে শোকের সাগরে পড়েছে, তা আমাদের খুব কাছাকাছি।
গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত ইসরাইলি গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গত বছরের নভেম্বরে দেওয়া রমজান কাদিরভের ঘোষণা অনুসারে গ্রোজনিতে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে ৩৫টি অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। সে সময় বলা হয়েছিল, রাশিয়ায় অন্তত ১ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছে।
এই আবাসন প্রকল্প ৪ হাজার ২০০ বর্গমিটার এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে।