কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় নুরুল হক হত্যা মামলায় ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় আরও ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত সবাইকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত।
২৬ জুন, বুধবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জাহঙ্গীর আলম এ রায় দেন।
এসব তথ্য জানিয়েছেন আদালতের এপিপি মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে সালিশের রায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নুরুল হককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মো. মাছুম (৩৫), তাজুল ইসলাম (৩২), মো. মোস্তফা (২৪), মো. কাইয়ুম (২৫), মো. কাইয়ুম (২৮) ও মো. তবদুল হোসেন (৪০)। তাদের মধ্যে রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন মো. কাইয়ুম ও মো. তবদুল হোসেন। বাকিরা পলাতক।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মো. নানু মিয়া (৪০), মতিন মিয়া (৪০), সাইদুল ইসলাম (২৪), বাবুল মিয়া (২৫), সফিকুল ইসলাম (৩৫), মো. সফিকুল ইসলাম (২৮), মোসলেম মিয়া (৪৫), মো. হেলাল মিয়া (২৫), বিল্লাল হোসেন (৩০) ও আবদুল আউয়াল (৩০)। রায় ঘোষণার সময় সাইদুল ইসলাম ও বিল্লাল হোসেন ছাড়া বাকিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ মামলার দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- হিরণ মিয়া ও মনিরুল ইসলাম।
এছাড়া বিচার চলাকালে মৃত্যু হওয়ায় ফুল মিয়া ও সেলিম নামে দুই আসামিকে মামলা থেকে বাদ দিয়েছেন আদালত।
আইনজীবী মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, নুরুল হক হত্যা মামলার এজাহারে মোট ২২ জন নামীয় ও অজ্ঞাতনামা ১২ জন আসামি ছিলেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন। মামলায় মোট নয়জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণপাড়ার ছোট দুশিয়া গ্রামের সালিশকারক নুরুল হককে হত্যা করা হয়। জমি নিয়ে স্থানীয় ফরিদ মিয়া ও মাছুমের মধ্যে বিরোধ ছিল। এ ঘটনায় নুরুল হকের নেতৃত্বে কয়েকবার সালিশ হয়। সালিশে ফরিদ মিয়ার বাড়ির দখল মাছুম মিয়াকে ছেড়ে দেওয়ার রায় দেন নুরুল হক। এরপর থেকে ক্ষোভে বিভিন্ন সময় তাকে হুমকি দিচ্ছিলেন মাসুম ও তার লোকজন। ওই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কুমিল্লা থেকে বাড়ি ফেরার পথে সবজুপাড়া শিদলাই রোড এলাকায় মাছুম ও তার পক্ষের লোকজন নুরুল হককে লোহার বল্লম দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। এ ঘটনায় নরুল হকের ছেলে মো. শরিফুল ইসলাম ব্রাহ্মণপাড়া থানায় হত্যা মামলাটি করেন। তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ১৩ বছর পর বুধবার এ রায় দিলেন আদালত।