ছাত্ররাই কেবল পরিবর্তন আনতে পারে : গয়েশ্বর

Spread the love

বর্তমান ফ্যাসিবাদী শাসককে পরাজিত করে দেশে গণতান্ত্রিক ধারায় পরিবর্তন আনতে অতীতের মতো ছাত্রসমাজকে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলতে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ‘৫২ ভাষা আন্দোলন, ৬২’ শিক্ষা আন্দোলন, ‘৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ, ‘৯০’র স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের ভূমিকা প্রসঙ্গ টেনে তিনি এই আহ্বান জানান।

আজ শুক্রবার (৩১ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি বক্তব্য দেন। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের পরিচালনায় আরো বক্তব্য প্রদান করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা আবু আফসান ইয়াহিয়া, আমানউল্লাহ আমান,জাহাঙ্গীর আলম, শরিফ প্রধান শুভ, গনেশ চন্দ্র রায় নাহিদুজ্জামান শিপন প্রমুখ।

শিশুরা সুন্দর মাতৃক্রোড়ে, ছাত্ররা সুন্দর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উল্লেখ করেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বাবা-মা তার সন্তানকে লেখাপড়ার জন্য পাঠিয়েছেন। ফলে একজন ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যাবে, আবাসিক হলে থাকবে, লেখাপড়া-খেলাধুলা করবে, সকল অন্যায় অত্যাচারের প্রতিবাদ করবে, প্রতিরোধ গড়বে। কিন্তু সেই ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে দেওয়া হয় না, গেলে তাদের রক্তাক্ত হতে হয়। বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের শাসন আমলে অর্থাৎ গত ১৫-১৬ বছরে কত যে সম্ভাবনায় জীবন শেষ হয়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিদিন আদালতের বারান্দায় হাজিরা দিতে যেতে হয়। আগ্রাসী শক্তি ছাত্র-যুবকের কণ্ঠরোধ করছে। ১৭ বছরে অনেক মেধাবী ছাত্রের জীবন ধ্বংস করা হয়েছে। যুবকরা নিজ নিজ স্থান থেকে বিতাড়িত হয়ে রাজপথে ঘুরছে।
আজকে ছাত্রদের যুদ্ধ করে প্রতিষ্ঠানে টিকে থাকতে হচ্ছে। এটি একটি অভিশপ্ত জীবন।’
বর্তমান ফ্যাসিবাদী শাসকগোষ্ঠীর পতন না হওয়া পর্যন্ত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শেষ পর্যন্ত রাজপথে থাকার আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘‘আমরা বিশ্বাস করি ছাত্ররাই কেবল পরিবর্তন আনতে পারে। ছাত্র বলতে শুধুমাত্র জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নয়; সকল ছাত্রসমাজ। এ দেশে যত পরিবর্তন হয়েছে, তার মূলে ছিল ছাত্ররা।

সকল অন্যায় অত্যাচারের পরিবর্তন করেছে ছাত্ররা। ‘৫২ থেকে ‘৯০ পর্যন্ত সকল পরিবর্তনের মূলে ছিল ছাত্ররা। এই ছাত্ররা যেদিন ক্যাম্পাস থেকে রাজপথে বেরিয়েই এসেছে, সেদিন আর কোনো সরকার টিকে নাই।’’
বর্তমান ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজী, ধর্ষণ ইত্যাদি নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড জড়িত বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতির নামে তারা যা করছে, তা ছাত্র সমাজের তথা জাতির জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায়। আমি আশা করব, ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে বর্তমান ফ্যাসিবাদের পতন ঘটবে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপিকে শেষ করতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়। কিন্তু যারা ভেবেছিল জিয়াউর রহমানকে হত্যার মধ্যদিয়ে বিএনপি শেষ হয়ে যাবে, তাদের মুখে চুনকালি মেখে দিয়ে গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে নেমে এসেছিলেন। তার নেতৃত্ব বিএনপি দেশে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। আবারও বিএনপিকে ধ্বংস করতে খালেদা জিয়াকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। সরকারের সে হীন চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আরো বেশি শক্তিশালী হয়েছে। তারেক রহমান এখন দেশের মানুষের মনে আস্থার আগে তৈরি করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি শেখ হাসিনা বলেছেন, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করবেন। যেদিন তিনি আসবেন সেদিন জনতার ঢেউয়ে আপনারা কোথায় ভেসে যাবেন তা চিন্তা করুন। প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই বলেন-যুদ্ধের সময় খালেদা জিয়া কোথায় ছিলেন? যাদের কোনো অবদান নেই তারাই এগুলো বলতে পারেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে বহুদলীয় গণতন্ত্র সবই তো জিয়া পরিবারের অবদান। জিয়াউর রহমান সম্মুখ যোদ্ধার অপরাধে দুই শিশু সন্তানসহ বন্দী রাখা হয় খালেদা জিয়াকে। আপনি প্রধানমন্ত্রী সে সময় কোথায় ছিলেন? সেসময় ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির ভাড়া কারা দিয়েছে? কারা আপনার বাসায় নিরাপত্তা দিত? আপনি (প্রধানমন্ত্রী) পাকিস্তানীদের টাকায় খাবার খেয়েছেন।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আজকে বিদেশি রেমিট্যান্স ও গার্মেন্টসের ওপর ভর করে রাষ্ট্র চালাচ্ছেন। এসব জিয়াউর রহমানের অবদান। জিয়া শুধু বীর উত্তম নন, উত্তমের উত্তম। জিয়াউর রহমানের সততা নিয়ে কারো কথা বলার সুযোগ নেই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *