ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটির হয়ে খেলেন ডিফেন্ডার হামজা চৌধুরী। বাংলাদেশি বংশদ্ভুত এই ফুটবলারের বাংলাদেশের জার্সিতে খেলার বিষয়ে অনেকদিন ধরেই আলোচনা চলছে। কয়েকদিন আগে নিজেও জানান, তিনি বাংলাদেশের হয়েই খেলতে চান। এবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন তাকে পাওয়ার জন্য কাজ শুরু করেছে। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার আজ জানান, সবকিছু ঠিকঠাক এগোলে চলতি বছরই লাল সবুজ জার্সিতে অভিষেক হতে পারে হামজার।
তুষার বলেন, ‘আমাদের ন্যাশনাল টিমস কমিটির চেয়ারম্যান ইতোমধ্যেই যুক্তরাজ্যে অবস্থিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতের (হাইকমিশনারের) সঙ্গে কথা বলেছেন। এরপর রাষ্ট্রদূত নিজে হামজার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। হামজার পরিবার যখন যখন দূতাবাসে (হাইকমিশনে) যাবেন, তখন তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। আমরাও তাদের সঙ্গে যোগাযোগের মধ্যে রয়েছি। কাগজ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই।
যেন দ্রুত তিনি অপয়েন্টমেন্ট নিতে পারেন (বাংলাদেশী পাসপোর্টের আবেদন করার) আমরা সেই ব্যবস্থা করেছি।’
হামজার মা বাংলাদেশি হওয়ায় বাফুফের জন্য কাজটা সহজ হচ্ছে বলে জানান তুষার। বাফুফের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘হামজার একটা সুবিধা হচ্ছে তার মা বাংলাদেশি। ফলে তার ক্ষেত্রে বিষয়টা ভিন্ন। বাংলাদেশের পাসপোর্ট পাওয়ার পর দৈত্ব নাগরিকত্বের জন্য তার আবেদন করতে হবে। এরপর তিনি বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারবেন। আমরা ইতোমধ্যে সেই কাজও এগিয়ে রাখছি। আশা করছি আগামী সেপ্টেম্বরের ফিফা উইন্ডোতে হামজা বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারবেন।’
শুধু হামজা নন, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের এবারের আসরে মোহামেডানকে নেতৃত্ব দেওয়া লেমান দিয়াবাতেকে নিয়েও কাজ শুরু করেছে বাফুফে। টানা পাঁচ মৌসুম ধরে মোহামেডানের হয়ে খেলা মালির এই ফরোয়ার্ফিডের ফিফার শর্ত মেনে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ তৈরী হয়েছে ।
এর আগে নাগরিকত্ব নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন জামাল ভুঁইয়া, তারিক কাজী, নাইজেরিয়ান নাগরিক এলিটা কিংসলেসহ বেশ ক’জন। হামজা ও দিয়াবাতেকে খেলাতে সেই অভিজ্ঞত কাজে লাগাতে চায় বলে জানান বাফুফে সাধারণ সম্পাদক।
তুষার বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই জামাল, তারিক কাজী, এলিটাকে নিয়ে কাজ করেছি। পাসপোর্ট হওয়ার পরের পদক্ষেপ নিয়েও আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। দিয়াবাতের সঙ্গে আমরা বসেছিলাম। তার কাছ থেকে আমাদের কিছু বিষয় জানার ছিল। যেমন এলিটাকে পাসপোর্ট নাইজেরিয়া কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিতে হয়েছে। তিনি (দিয়াবাতে) জানিয়েছেন, তিনি দৈত্ব নাগরিকত্ব নিতে পারবেন। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছি বাংলাদেশে অবস্থানকালে তার সনদের জন্য। কারণ ফিফার নিয়মানুযায়ী এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দুই ফুটবলারের জন্যই কাজ করছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যেই ভালো খবর দিতে পারবো।’
এছাড়া টানা চার মৌসুম ধরে বসুন্ধরা কিংসের হয়ে খেলা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডা রবসন রবিনহোকেও জাতীয় দলে খেলাতে চায় বাফুফে। এ প্রসঙ্গে তুষার বলেন, ‘রবসনের ক্ষেত্রে আরও একটু সময় নিয়ে কাজ করতে হবে। কারণ আগামী মৌসুমে তার পাঁচ বছর পূর্ণ হবে। তখন তার ইচ্ছা থাকলে আমরা তাকে নিয়েও কাজ করবো।’