হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ইরানের জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি। এখন সংবিধানের অধীনে প্রেসিডেন্টের পদ পূরণের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করার কথা ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবের-এর। এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খোমেনির। সংবিধানের ১৩১ ধারা অনুযায়ী, এই পদে আসার কথা ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্টের। তাকে অনুমোদন দেয়ার পর সুপ্রিম নেতা অনুমোদন বা নিশ্চয়তা দিলে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বে আসবেন। তাকেই বাকি সব কর্মপ্রক্রিয়া নির্ধারণ করতে হবে। বর্তমান ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবেরের বয়স ৬৮ বছর। এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাতে তিনিই হচ্ছেন নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট। তার নেতৃত্বে স্পিকার ও বিচার বিভাগের প্রধান মিলে প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর ৫০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন।
মোহাম্মদ মোখবেরের জন্ম ১৯৫৫ সালের ১লা সেপ্টেম্বর। তাকে সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খোমেনির খুব ঘনিষ্ঠ বলে দেখা হয়।
২০২১ সালে রইসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সময় তিনি ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। অক্টোবরে ইরানের একটি প্রতিনিধি দল মস্কো সফর করেন। সেই টিমে ছিলেন মোহাম্মদ মোখবের। এই সফরে ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং অধিক পরিমাণে ড্রোন রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে সরবরাহ দিতে রাজি হয় ওই প্রতিনিধি দল। ওই দলে ছিলেন ইরানের রেভ্যুলুশনারি গার্ডের সিনিয়র দু’জন কর্মকর্তা এবং সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের একজন কর্মকর্তা। সুপ্রিম নেতার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি বিনিয়োগ বিষয়ক তহবিল ‘সেতাদ’-এর প্রধান হিসেবে এর আগে দায়িত্ব পালন করেছেন মোহাম্মদ মোখবের।
পারমাণবিক বা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইরানের যেসব ব্যক্তি ও এনটিটির বিরুদ্ধে ২০১০ সালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তার মধ্যে মোহাম্মদ মোখবের অন্যতম। তবে দু’বছর পরে ওই তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেয় ইইউ। ২০১৩ সালে সেতাদ এবং ৩৭টি ইরানি কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়। ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির নির্দেশে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল সেতাদ।