দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হামাস

Spread the love

ইসরায়েল কর্তৃক গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর সেখানে দীর্ঘমেয়াদে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবাইদা এ ঘোষণা দেন।

শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় আবু উবাইদা বলেন, ‘আমাদের জনগণের ওপর কয়েক মাস ধরে যে নির্মম আগ্রাসন চলছে, তা বন্ধের জন্য আমরা পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একই সঙ্গে শত্রুদের সঙ্গে গাজায় দীর্ঘমেয়াদে লড়াই চালিয়ে যেতেও আমরা প্রস্তুত।’

প্রায় দুই সপ্তাহ আগে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর রাফায় অভিযান শুরু করেছে আইডিএফ। সেখানেও ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে হামাস যোদ্ধাদের তীব্র সংঘাত চলছে বলে দাবি করেছেন আবু উবাইদা।

ভিডিও বার্তায় এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত ১০ দিনে পুরো গাজা উপত্যকায় অন্তত ১০০ ইসরায়েলি সামরিক সাঁজোয়া যানকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে আল-কাসেম ব্রিগেডের যোদ্ধারা। রাফাহ শহরে আমাদের যোদ্ধাদের সঙ্গে আগ্রাসনকারী বাহিনীর তীব্র লড়াই হচ্ছে এবং শহরের পূর্বাঞ্চলে শত্রুরা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।

এদিকে সব ধরনের আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে ফিলিস্তিনিদের শেষ নিরাপদ আশ্রয়স্থল রাফায় অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। স্থল অভিযানের পাশাপাশি আকাশ থেকেও ফেলা হচ্ছে বোমা। ফলে সেখানে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। রাফাহ ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। এরই মধ্যে রাফাহ থেকে অন্তত ছয় লাখের বেশি ফিলিস্তিনি অন্যত্র চলে গেছে। একইভাবে উত্তর গাজা থেকেও সরে যাচ্ছে বহু ফিলিস্তিনি।

উত্তরাঞ্চলীয় জাবালিয়ায় ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে হামাসের চলমান লড়াই আরো তীব্র হয়েছে। সেখানে ট্যাংক-বুলডোজার নিয়ে প্রবেশ করে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে সেনারা। হামাসের সুড়ঙ্গপথের কাছে সশস্ত্র যোদ্ধাদের সঙ্গে তীব্র লড়াই করছে তারা।

গাজার আটটি শরণার্থী শিবিরের মধ্যে সবচেয়ে বড় জাবালিয়া শরণার্থী শিবির। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, জাবালিয়ায় ইসরায়েলি বাহিনী প্রবেশ করেছে। পথিমধ্যে বুলডোজার দিয়ে বাড়ি-ঘর ও দোকানপাট পিষে দিয়েছে তারা।

অক্টোবরে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। যুদ্ধ শুরুর প্রথম কয়েক মাসের মাথায় জাবালিয়াকে হামাসমুক্ত করার দাবি করেছিল তারা। তবে গত সপ্তাহে সেখানে আবারো হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের দাবি, সশস্ত্র যোদ্ধারা সেখানে পুনরায় একত্র হতে শুরু করেছে। তাই তাদের রুখতে জাবালিয়ায় আবারো হামলা শুরু করেছে তারা।

যুদ্ধ তীব্র হওয়ার মধ্যেই গাজায় প্রথমবারের মতো ভাসমান বন্দর দিয়ে ত্রাণ প্রবেশের কথা জানিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। ভাসমান এ বন্দর দিয়ে গাজায় খাদ্য, পানি, আশ্রয় ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পৌঁছাবে বলে আশা করছে দ্য ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম। সংস্থাটি জানিয়েছে, মধ্য গাজার দেইর আল বালাহর গুদামে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। সেগুলো বিতরণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। খবর আল জাজিরা ও রয়টার্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *