গরম বাড়লে পরিপাকতন্ত্রের গতি ধীর হয়ে যায়। সেখান থেকেই হজমসংক্রান্ত নানান জটিলতার সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া এ সময় খাবার দ্রুত দূষিত হয়, পচন ধরে বলে ডায়রিয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায় কয়েক গুণ।
ডায়রিয়া তিন ধরনের। অ্যাকিউট: মানে হঠাৎ দেখা দেওয়া ডায়রিয়া। সাধারণত খাদ্যে বিষক্রিয়া কিংবা গ্যাস্ট্রোএনট্রাইটিসের সমস্যার কারণে এমনটা হয়। এ ক্ষেত্রে পেট খারাপ, পেট খামচে ধরা, পেট কামড়ানো, গা গোলানো, বমি ভাব ও জ্বর আসে। বর্তমানে শিশুদের এটি বেশি দেখা দিচ্ছে। পার্সিসট্যান্ট: এ ক্ষেত্রে পেটের সমস্যা দুই থেকে চার সপ্তাহ থাকে। ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি: যদি সমস্যা চার সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়, তবে এটি ক্রনিক ডায়রিয়া। একাধিক কারণে পরিপাকতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হলে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়।
গরম বাড়লে পরিপাকতন্ত্রের গতি ধীর হয়ে যায়। সেখান থেকেই হজমসংক্রান্ত নানান জটিলতার সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া এ সময় খাবার দ্রুত দূষিত হয়, পচন ধরে বলে ডায়রিয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায় কয়েক গুণ।
কী করবেন
ডায়রিয়া বা পেট খারাপ হলে অবশ্যই বারবার স্যালাইন খেতে হবে। পানিশূন্যতা যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদি স্যালাইনও বমি হয়ে যায়, তবে হাসপাতালে গিয়ে শিরায় স্যালাইন নিতে হতে পারে।
হজমশক্তি ঠিক রাখতে আদা ভীষণ উপকারী। এটি অন্ত্রকে সুস্থ রাখে ও পেট খারাপ সারিয়ে তোলে। এই চা দিনে অন্তত দু-তিনবার খেতে পারেন।
ধনেপাতা, লেবুপানি ও পুদিনাপাতা খাওয়া যায়। ধনেপাতার অ্যান্টি–ইনফ্লেমেটারি কার্যকারিতা আছে। আবার এ পাতার বিশেষ তেল থাকে, যা পেটকে আরাম দেয়। লেবুর অ্যান্টি–ইনফ্লেমেটারি কার্যকারিতা যেমন পাওয়া যায়, তেমন পুদিনাপাতার অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল কার্যকারিতা রয়েছে, যা ডাইজেস্টিভ জুসের প্রবাহ বাড়িয়ে তোলে এবং হজমে সহায়তা করে।
পেট খারাপে দারুণ কাজ দেয় বেদানা। বেদানার পাতাও পাতলা পায়খানার সমস্যা সারিয়ে তোলে। ঘরোয়া পদ্ধতির পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।
সচেতনতা
গরমে যাতে হজমের সমস্যা না হয়, সে জন্য অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত ও বাসি খাবার এড়িয়ে চলুন। বাইরে কেটে রাখা ফল ও পানীয় খাবেন না। পরিমিত ও হালকা খাবার খান।
চিকিৎসা
প্রাথমিকভাবে খাওয়ার স্যালাইনই ডায়রিয়ার প্রধান চিকিৎসা। অ্যাকিউট ডায়রিয়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আপনা থেকেই সেরে যায়। কিন্তু ডিহাইড্রেশন হলে বিপদ। তাই রোগীর ডিহাইড্রেশন হচ্ছে কি না, নজর রাখুন। বেশির ভাগ ডায়রিয়ায় ওষুধ লাগে না। তবে ব্যাকটেরিয়াজনিত ডায়রিয়ায় অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। ডায়রিয়া কমলেই ওষুধ বন্ধ করবেন না। পূর্ণ মেয়াদ সম্পন্ন না করলে অ্যান্টিবায়োটিকের ড্রাগ রেসিস্ট্যান্স হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।