৮০ ঘণ্টায় ‘বাড়ি বানিয়ে দেবে’ বিশ্বের বৃহত্তম থ্রিডি প্রিন্টার

Spread the love

সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে বড় পলিমার থ্রিডি প্রিন্টার উন্মোচন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভার্সিটি অফ মেইন’।

নতুন এই প্রিন্টারের নাম ‘ফ্যাক্টরি অফ দ্য ফিউচার ১.০ (এফওএফ ১.০), যা ৯৬ ফুট দৈর্ঘ্য, ৩২ ফুট প্রস্থ ও ১৮ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত বিভিন্ন বস্তু প্রিন্ট করতে সক্ষম। এর প্রিন্ট করার গতিও অনেক বেশি, যেখানে প্রতি ঘণ্টায় ২২৬ কেজি পর্যন্ত ভরের বস্তু প্রিন্ট করা সম্ভব, যা তিনজন মানুষের ভরের সমান।

আর এর প্রিন্টিং কৌশলগুলো এমনভাবে নকশা করা যাতে এর মাধ্যমে বিভিন্ন জটিল কাজ করা যায়। প্রিন্টারটি বড় ও ছোট পরিসরের বস্তু থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোবটের বাহুও তৈরি করতে সক্ষম।এমন প্রযুক্তির মাধ্যমে বেশ কিছু শিল্পে বিশেষভাবে মানিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে প্রিন্টারটি, যার মধ্যে রয়েছে বাড়ি ও অবকাঠামো নির্মাণ এবং সামরিক বাহিনীর জন্য যানবাহন তৈরির মতো বিষয়ও।

প্রিন্টারটি দিয়ে যেসব বস্তু তৈরি করা যায়, তার বেশিরভাগই পুনর্ব্যবহারযোগ্য। তাই ‘আপনি এর থেকে তৈরি বস্তুগুলো চাইলেই ভেঙে ফেলতে পারবেন’ ও ‘চাইলে আবারও সেটি বানাতে পারেন’ বলে উল্লেখ করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ মেইনের ‘অ্যাডভান্সড স্ট্রাকচার্স অ্যান্ড কম্পজিট সেন্টারে’র পরিচালক ড. হাবিব দাগিয়ে।

এক্ষেত্রে প্রিন্টারটিতে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন জৈব উপাদানের দিকে। যেমন- কাঠের অবশিষ্টাংশ।

খুব দ্রুতই সাশ্রয়ী মূল্যে অনেক বাড়ি নির্মাণের উপায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এ প্রযুক্তিটি। আর নির্মাতারা সে বিষয়টি মাথায় রেখেই প্রিন্টারটি বানিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি সাইট এনগ্যাজেট।

“মেইন অঙ্গরাজ্যে ২০৩০ সাল নাগাদ আনুমানিক ৮০ হাজার অতিরিক্ত বাড়ির প্রয়োজন পড়বে। বিশেষ করে সেইসব পরিবারের, যাদের উপার্জন এলাকার গড় আয়ের সমান বা তার চেয়ে কম,” বলেন মেইনহাউজিংয়ের উন্নয়ন পরিচালক মার্ক ওয়াইজেনডেঞ্জার।

“এ প্রচেষ্টা সাশ্রয়ী বাড়ির উৎপাদনের মান বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে, যেখানে মেইনের বিভিন্ন স মিল থেকে পরিত্যাক্ত কাঠ ব্যবহার করে এর খরচ আরও কমিয়ে আনা সম্ভব।”

“একদিন হয়ত গোটা এলাকাই বানিয়ে ফেলতে পারবে এটি।”

প্রিন্টারের স্পেসিফিকেশন থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, মাত্র ৮০ ঘণ্টার মধ্যেই একটি চলনসই এক তলা বাড়ি বানানো সম্ভব এতে।

তবে, প্রিন্টারটি কেবল গৃহহীনদের সহায়তার উদ্দেশ্যে তৈরি, বিষয়টি এমন নয়। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের ‘আর্মি কোর অফ ইঞ্জিনিয়ার্স’, প্রতিরক্ষা ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় থেকে আর্থিক অনুদান পেয়েছেন ইউনিভার্সিটি অফ মেইনের গবেষকরা।

আর সেই বিনিয়োগের প্রতিদান নিশ্চিতভাবেই পেতে চাইবে এইসব সরকারি প্রতিষ্ঠান। তাই সাবমেরিন ও অন্যান্য সামুদ্রিক জাহাজের মতো বিভিন্ন হালকা ওজনের দ্রুত স্থাপনযোগ্য যান তৈরির ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহারের সম্ভাবনা আছে।প্রিন্টারটিকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য খুবই মূল্যবান’ বলে আখ্যা দিয়েছেন মার্কিন সিনেটর সুজান কলিন্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *