ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ব্যবস্থায় বৈষম্য বিদ্যমান। তাই ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি প্রবর্তন করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আয়োজনে রবিবার বাদ যোহর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যার বিচার; দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার, অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা; সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রবর্তন এবং ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামী সমাজ ভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের জেলা সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।
গণসমাবেশে বক্তারা বলেন, পৃথিবীর বহু দেশে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর এই বিষয়ে সোচ্চার না হওয়া দুঃখজনক।
বক্তারা বলেন, শেখ হাসিনা মানুষকে মানুষ মনে করতেন না। তাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শতশত মানুষ খুন করেছে ও সহস্রাধিক মানুষকে আহত ও পঙ্গু এবং অন্ধ করেছে। আমরা এসব জুলুম-অত্যাচারের পুঙ্খানুরূপে সর্বোচ্চ বিচার চাই।
তারা বলেন, আ. লীগ সরকার ও এই দলের নেতা-কর্মীরা গত ১৬ বছরে সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম, লুটপাট, খুন, গুম ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। আয়নাঘর ও ডিবি অফিসগুলোকে পাশবিক ও মানসিক নির্যাতনের কেন্দ্রে পরিণত করেছে। বাকস্বাধীনতা হরণ করেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে দায়সারা ভূমিকা পালন করেছে। আমরা এসকল অন্যায়ের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
বক্তারা বলেন, সকল দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার পূর্বক অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।
গণসমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, এদেশের ছাত্র-জনতা আ. লীগের পতন ঘটিয়েছে। নতুন করে যারা তাদের অপকর্মের স্থান দখল করে নিচ্ছে তাদের বিষয়ে সোচ্চার থাকতে হবে।
তাঁরা ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামী সমাজভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ভবিষ্যত নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহবান জানান।
আন্দোলনের জেলা জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা মাহমূদুল হাসান হিফয্ ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ্ মোহাম্মদুল্লাহ’র যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের সাবেক জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ ও আলহাজ্ব মুসলেহ উদ্দীন ভূঁইয়া, সাবেক জেলা সহ-সভাপতি আলহাজ্ব সৈয়দ আনোয়ার আহমদ, উপদেষ্টা মাওলানা উসমান গনী রাসেল, জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল মালেক ফয়েজী, সেক্রেটারি মাওলানা গাজী নিয়াজুল করীম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা বেলাল হোসাইন, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের জেলা সভাপতি শায়খুল হাদীস মাওলানা শরীফ উদ্দীন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের জেলা সভাপতি শেখ মুহাম্মদ শাহ আলম, ইসলামী যুব আন্দোলনের জেলা সভাপতি মুফতি আশরাফুল ইসলাম বিলাল, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের জেলা সভাপতি মাওলানা হেলাল উদ্দিন, ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সভাপতি এম আবু হানিফ নোমান প্রমুখ। এছাড়াও আন্দোলনের সকল উপজেলা ও সকল সহযোগী সংগঠনের জেলা শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
গণসমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্ররা শায়খে চরমোনাইকে ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে বরণ করে নেন।
এতে প্রতিটি উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন এবং অঞ্চল থেকে মিছিলসহ নেতা-কর্মীরা যোগদান করেন।
