চীনকে বাংলাদেশে সৌর বিদ্যুতের কারখানা স্থানান্তরের আহ্বান ড. ইউনূসের

Spread the love

দেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দিতে সৌর বিদ্যুতের গুরুত্ব রয়েছে। শিল্প ও বাণিজ্যিক ভবনে সৌর বিদ্যুতের প্যানেল স্থাপন করলে বিপুল অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব।

চীনকে সে দেশের কয়েকটি সোলার প্যানেল কারখানা বাংলাদেশে স্থাপন করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান। এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বেইজিং এবং ঢাকার মধ্যে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, চীন সৌর বিদ্যুতের অন্যতম বৃহত্তম প্রস্তুতকারক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, কিন্তু দেশটি ক্রমবর্ধমানভাবে রপ্তানি বাজারে বিধিনিষেধের সম্মুখীন হচ্ছে।

ড. ইউনূস বলেন, চীনা প্রস্তুতকারীরা তাদের সৌর বিদ্যুতের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরিত করতে পারে, যা বাংলাদেশকে রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণে এবং সবুজ অর্থনীতিতে রূপান্তর করতে সহায়তা করবে।

তিনি চীনের সাথে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশি পণ্যের আমদানি বৃদ্ধির আহ্বান জানান। একই সঙ্গে প্রযুক্তি স্থানান্তর ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা এবং কৃষিতে সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বানও জানান।

ইয়াও ওয়েন চীনের নেতৃত্ব এবং জনগণের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানান এবং বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে তার দায়িত্ব গ্রহণের জন্য শুভেচ্ছা জানান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বেইজিং ঢাকার সাথে কাজ করতে প্রস্তুত। আমি আশা করি প্রধান উপদেষ্টা দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের প্রত্যাশা পূরণ করবেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি চীন এবং বাংলাদেশ উভয়ের সম্পর্ককে সমগ্র কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্বে উন্নীত করেছে এবং উভয় দেশ আগামী বছর কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করবে।

বৈঠকে উঠে আসে রোহিঙ্গা ইস্যুও। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে স্থায়ী সমাধানে পৌঁছাতে চীন বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে জানান চীনা রাষ্ট্রদূত।

রাষ্ট্রদূত বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘর্ষপূর্ণ এলাকায় একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য চীন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস আশা করেন, চীন এক ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগণের জন্য রাজনৈতিক, আর্থিক এবং মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে।

চীনা রাষ্ট্রদূত চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার বন্যা ত্রাণ তহবিলে ২০ হাজার মার্কিন ডলার সমমূল্যের একটি চেক হস্তান্তর করেন। চীনা দূত জানান বলেন, চীনা রেড ক্রসও বাংলাদেশের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য এক লাখ মার্কিন ডলার মানবিক সাহায্য প্রদান করবে।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে যাত্রা শুরু করেছিল গ্রামীণ শক্তি। গত শতকের ৯০ এর দশকের শুরুর দিকে বাংলাদেশের ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে প্রত্যন্ত এলাকায় সৌর বিদ্যুতের প্যানেল বসানো উদ্যোগ নেন অধ্যাপক ইউনূস। এবার অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সোলার প্যানেল নিয়ে চীনের সাহায্য চাইলেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *