হানিয়া-হত্যার বদলা নিতে ইরানে লাল পতাকা উত্তোলন, বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রতিক্রিয়া

Spread the love

ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরাইলি হামলায় হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার নিহতের ঘটনায় জামকারান মসজিদে ‘ইয়ালাসারাত আল-হুসেইন’ বা আল-হোসেইনের আঘাত লেখা লাল পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

ইরানে প্রতিশোধের প্রতীক এ লাল পতাকা উত্তোলনের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ইরনা জানিয়েছে, মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন এক্সামিনর এক প্রতিবেদনে লিখেছে, ইরান প্রতিশোধের প্রতীক লাল পতাকা উত্তোলন করেছে এবং হামাস নেতাকে হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছে।

মার্কিন গণমাধ্যমটি লিখেছে, এ পতাকা কালেভদ্রে উত্তোলন করা হয়। এর আগে জেনারেল কাসেম সোলাইমানির নিহতের পর এটি উত্তোলন করা হয়েছিল।

ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং ফ্রান্সের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য গণমাধ্যম দৈনিক লা মন্ড এ বিষয়ে লিখেছে, শিয়াদের কাছে পবিত্র স্থাপনা হিসেবে পরিচিত জামকারান মসজিদে বুধবার লাল পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যার ‘বড় ধরনের প্রতিশোধ’ গ্রহণের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। যে হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরাইলকে দায়ী করা হচ্ছে। ২০২০ সালে ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানির নিহতের পরও একবার এ পতাকা উড্ডয়ন করা হয়েছিল।

লন্ডন থেকে প্রকাশিত গণমাধ্যম নিউ আরব এ বিষয়ে এক নিবন্ধে লিখেছে, ইসমাইল হানিয়া হত্যাকাণ্ডের পর ইরান লাল পতাকা উড্ডয়ন করেছে। কারণ, আয়াতুল্লাহ খামেনি ইসরাইলে হামলা চালানোর নির্দেশ জারি করেছেন।

মিশরীয় দৈনিক ইজিপ্ট ইন্ডেপেন্ডেন্ট লিখেছে, হানিয়া হত্যাকাণ্ডের পর ইরানে লাল পতাকা উড্ডয়ন কী বার্তা বহন করে? এরপর দৈনিকটি নিজেই এ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে লিখেছে, ইরান সম্ভাব্য কঠিন লড়াইয়ের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি স্বরূপ এ পতাকা উড্ডয়ন করেছে। শিয়া মাজহাবে লাল রঙ অন্যায়ভাবে ঝরানো রক্তের প্রতীক এবং এর মাধ্যমে শহিদের রক্তের বদলা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। প্রাচীন ইরানে হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তির ঘরের দরজায় লাল রঙের পতাকা উড্ডয়ন করা হতো এবং হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ না নেওয়া পর্যন্ত ওই পাতাকা নামাকে হতো না।

ভারতীয় দৈনিক কাশ্মির অবজারভারও এ বিষয়ে বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে। এক নিবন্ধে বলেছে, ইরান প্রতিশোধের প্রতীক লাল পতাকা উড্ডয়ন করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি ইসমাইল হানিয়ার রক্তের বদলা নিতে ইসরাইলকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার হুমকি দেওয়ার পর কোমের একটি বড় মসজিদে এ পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এর আগে ইসরাইলে ইরানের নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার সময় সর্বশেষ এ পতাকা উড্ডয়ন করা হয়েছিল।

বিষয়টি এমন সময় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সাড়া ফেলেছে, যখন দুজন শীর্ষস্থানীয় প্রতিরোধ ব্যক্তিত্বর শাহাদাতের প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কায় ইসরাইলে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো শুক্রবার রাতে জানিয়েছে, ইরানি হামলার আশঙ্কায় ইসরাইলি হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো ইরানের সম্ভাব্য হামলা সম্পর্কে লিখেছে, এবার ইরান বিশাল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাবে। ইরান ও প্রতিরোধ ফ্রন্টের প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কায় ইসরাইলি যুদ্ধমন্ত্রী ইওভ গ্যালান্ট ইসরাইলকে রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক জোট গঠন করার আহ্বান জানিয়েছেন।

হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া গত বুধবার ভোররাতে ইরানের রাজধানী তেহরানে এক সন্ত্রাসী হামলায় দেহরক্ষীসহ নিহত হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *