প্রথমার্ধের দাপটু ইংল্যান্ডকে দ্বিতীয়ার্ধে সেরের উপর সোয়াসের দিখিয়ে দিল নেদারল্যান্ড। একের পর এক আক্রমণে ইংলিশ রক্ষণকে তটস্থ করে রেখেছিল তারা। কিন্তু ভাগ্য খারাপ হলে যা হয়! ম্যাচ তখন প্রায় শেষের পথে, ৯০ মিনিট চলছিল ১-১ সমতা নিয়ে। এমন সময়ে আচমকা গোল হজম করে বসে ডাচরা। ওলি ওয়াটকিনসের শেষ মুহূর্তের সেই গোলেই ৩৬ বছর পর ইউরোর ফাইনালে ওঠার স্বপ্নভাঙল নেদারল্যান্ডসের।
নেদারল্যান্ডসকে ২-১ গোলে হারিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠে গেছে ইংল্যান্ড। গতবার ইতালির কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছিল থ্রি লায়ন্সদের।
এই জয়ে প্রথমবারের মতো নিজ দেশের বাইরে আয়োজিত কোনো মেজর টুর্নামেন্টে ফাইনালের টিকিট পেলো ইংলিশরা। আগামী রোববার রাতে বার্লিনের ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ স্পেন, যারা প্রথম সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়েছে ২-১ গোলে।
ডর্টমুন্ডের সিগনাল ইদুনা পার্কে ম্যাচের শুরু থেকে ইংলিশরা দাপট দেখিয়ে খেলতে থাকে। যদিও ম্যাচের সাত মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় ডাচরাই। ডেকলাইন রাইসের কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে জাভি সিমন্সের দূরপাল্লার বুলেট গতির শটে ১-০ ব্যবধান করে নেদারল্যান্ডস। জাতীয় দলের হয়ে এটি তার দ্বিতীয় গোল।
এক গোল খেয়ে আরও আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে ইংল্যান্ড। ১৩ মিনিটে হ্যারি কেইনের দূরপাল্লার শট দারুণভাবে রুখে দেন ডাচ গোলরক্ষক।
১৬ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর দারুণ শট নেন হ্যারি কেইন, তবে তা চলে যায় গোলবারের উপর দিয়ে। কিন্তু ভিএআরে দেখা যায় ডামফ্রিস ফাউল করেছেন কেইনকে। রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। স্পট কিক থেকে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান কেইন। গোলরক্ষক ঠিক দিকে ঝাঁপিয়ে পড়লেও জোরালো গতির শট আটকাতে পারেননি।
৩০ মিনিটে ডাচরাও সুযোগ পায় আবারও এগিয়ে যাওয়ার। কিন্তু ডামফ্রিসের হেড গোলপোস্টে প্রতিহত হয়। ৩২ মিনিটে ম্যাচে প্রথমবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় ইংল্যান্ড। তবে ফিল ফোডেনের বুলেট গতির শটও গোলবারে লেগে প্রতিহত হলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি তাদের।
৪০ মিনিটে আবারও ফিল ফোডেন দূরপাল্লার শট নেন। তবে এবার ডাচ গোলরক্ষক বুদ্ধিমত্তার সাথে সেটি তালুবন্দি করেন। প্রথমার্ধে ৬৩ শতাংশ বল নিজেদের দখলে নিয়ে খেললেও ইংল্যান্ড ১-১ সমতায় থেকেই বিরতিতে যায়।
প্রথমার্ধে দুর্দান্ত লড়াই করা দুই দলই দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে একটু যেন ঝিমিয়ে পড়ে। বিরতির পর প্রথম ২০ মিনিটে কোনো দলই বলার মতো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।
অবশেষে দারুণ দুটি সুযোগ তৈরি করে নেদারল্যান্ডস। ৬৫ মিনিটে জোয়ে ভিয়ারম্যানের ক্রস বক্সের মধ্যে পেয়ে বাঁ পায়ে গোলমুখে ঠেলেছিলেন ভার্জিল ফন বিক, পিকফোর্ড ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত সেভ করে ইংল্যান্ডকে বাঁচান। এরপর কর্নার থেকে পাওয়া বলে ড্যানজেল ডামফ্রিসের হেডও আটকান ইংলিশ গোলরক্ষক।
পাল্টা আক্রমণে লড়াইয়ে ফেরার চেষ্টা করে ইংল্যান্ড। অবশেষে ৭৯ মিনিটে কাইল ওয়াকারের ডানদিকের ক্রস থেকে বল জালে জড়ান বুকোয়া সাকা। কিন্তু অফসাইডের কারণে সে গোল বাতিল করে দেন রেফারি।
ম্যাচে তখন প্রায় শেষ বাঁশি বাজার অপেক্ষা। ৯০ মিনিটে কোলে পালমারের থ্রো বল থেকে বক্সের ডানদিক থেকে বদলি নামা অলি ওয়াটকিনস শট নেন, পোস্টের বাঁ কোণা দিয়ে বল জড়িয়ে যায় জালে। জয়ের উল্লাসে মাতে ইংলিশ শিবির।