৭ দেশের নাগরিকদের লেবানন ছাড়ার নির্দেশ

Spread the love

মধ্যপ্রাচ্যে বাজছে নতুন আরেক যুদ্ধের দামামা। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধের উত্তেজনা ছড়িয়েছে লেবাবনেও। টানা প্রায় ৯ মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। আর এই আগ্রাসনের শুরু থেকেই লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে সাতটি দেশ তাদের নাগরিকদের লেবানন ছাড়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। এর মধ্যে লেবাননে অবস্থানরত সৌদি নাগরিকদের অবিলম্বে দেশটি ছাড়তে বলা হয়েছে।
৩০ জুন, রবিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল এবং লেবাননের সশস্ত্র গ্রুপ হিজবুল্লাহর মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আশঙ্কার মধ্যে সাতটি দেশ তাদের নাগরিকদের লেবানন ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া আরও পাঁচটি দেশ তাদের নাগরিকদের এই সময়ে লেবাননে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

বৈরুতের সৌদি দূতাবাস শনিবার লেবাননে অবস্থানরত তার নাগরিকদের ‘অবিলম্বে লেবানিজ ভূখণ্ড ত্যাগ করার’ আহ্বান জানিয়েছে এবং ‘যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে তাদের দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ রাখার’ প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে।

বিবৃতিতে সৌদি দূতাবাস জানিয়েছে, সৌদি নাগরিকদের অবিলম্বে লেবাননের ভূখণ্ড ত্যাগ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে এবং যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হচ্ছে।

গত ২২ জুন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত তাদের নিজ দেশের নাগরিকদের লেবাননে ভ্রমণ এড়াতে এবং ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে’ দেশটিতে থাকা ব্যক্তিদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে।

কুয়েতের এ সতর্কতা জারির পরই একে একে বিভিন্ন দেশ লেবাননে অবস্থান ও ভ্রমণ বিষয়ে সতর্কতা ও নির্দেশনা দিতে থাকে।

লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের উত্তেজনা চরম পর্যায়ে পৌঁছনোর কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের নাগরিকদের লেবানন ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

লেবাননে অবস্থিতি মার্কিন দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, লেবানন ভ্রমণ করার ক্ষেত্রে নাগরিকদের সর্বোচ্চ বিবেচনার কথা আমরা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের লেবাননের দক্ষিণ, সিরিয়ার সীমান্ত ও শরণার্থী ক্যাম্পের কাছাকাছি যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

গত শুক্রবার (২৮ জুন) নিরাপত্তা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে অস্ট্রেলিয়াও তার নাগরিকদের লেবাননে ভ্রমণ না করতে পরামর্শ দেয়। লেবাননে অবস্থানরত অস্ট্রেলিয়ানদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানান অস্ট্রেলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং।

একইদিন জর্দান তার নাগরিকদের লেবাননে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেয়। লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে নিজ দেশের নাগরিকদের লেবানন ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কানাডিয়ান সরকারও।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘দেশে এবং বিদেশে কানাডিয়ানদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষাই কানাডার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’।

লেবাননে অবস্থান ও ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে ইউরোপের দেশ জার্মানিও। নিজ দেশের নাগরিকদের দেশটি ছেড়ে চলে যেতে বলে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও একটি ভ্রমণ সতর্কতা জারি করে বলেছেন, ইসরায়েল ও লেবাননের সীমান্তে পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ।

লেবানন ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে উত্তর মেসিডোনিয়াও। রবিবার তার নাগরিকদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশটি ছেড়ে চলে যেতে বলেছে।

নিজ দেশের নাগরিকদের লেবাননে ভ্রমণে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ইউরোপের আরেক দেশ নেদারল্যান্ডস। একইসঙ্গে যারা সেখানে বসবাস করেন তাদের বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু থাকা অবস্থায়ই দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে দেয়া এক পোস্টে ডাচ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ আহ্বান জানায়।

লেবান ছাড়ার নিদের্শনা দিয়ে রাশিয়া নিজ দেশের নাগরিকদের বলেছে, পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত দেশটিতে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকতে। লেবাননে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার রুদাকভ রুশ নাগরিকদের অপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, কূটনৈতিক মিশন স্বাভাবিকভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এবং দূতাবাসের কর্মচারীদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

গত ২৬ জুন (বুধবার) নিজ দেশের নাগরিকদের লেবাননে ভ্রমণ না করতে কঠোরভাবে নির্দেশ দেয় যুক্তরাজ্য।

দেশটির ফরেন, কমনওয়েলথ এবং ডেভেলপমেন্ট অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েল এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলের মধ্যে সংঘর্ষের ঝুঁকির কারণে এফসিডিও লেবাননে সকল ধরনের ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিচ্ছে।

এই তালিকায় রয়েছে আয়ারল্যান্ডও। লেবাননের নির্দিষ্ট এলাকায় ভ্রমণ না করতে পরামর্শ দিয়েছে আইরিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দেশটিতে অবস্থানরত আইরিশ নাগরিকদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *