বার্বাডোজের ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে ভারত। উভয় দলই পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছে এবং অপরাজিত থেকেই ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। তাই বলা যায়—শিরোপার লড়াইয়ে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না। রোমাঞ্চকর এই ম্যাচ দেখতে তাই তো চাতক পাখির মতো ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখ এখন এই ম্যাচের ওপর। আজ রাত সাড়ে ৮টায় বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে অনুষ্ঠিত হবে এই ম্যাচটি।
নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন প্রোটিয়ারা। অন্যদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে শিরোপা জয়ের পর পরবর্তী সাত আসরে শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে পারেননি ভারতীয়রা। যদিও এবারের আসরের শিরোপার অন্যতম দাবিদার হয়ে আয়োজক দেশে পা রাখেন রোহিত-কোহলিরা। এখন পর্যন্ত পুরো টুর্নামেন্টে অপরাজিত ভারতীয়রা। সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর গত পরশু সেমিফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নেওয়ার পাশাপাশি জায়গা করে নেয় স্বপ্নের ফাইনালে। এর আগে সবশেষ ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই ইংলিশদের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেন ২০০৭ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
অন্যদিকে ভারতের মতো অপরাজিত থেকে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে প্রথম পর্বের প্রতিটি ম্যাচেই শ্বাসরুদ্ধকর জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন প্রোটিয়ারা। যদিও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে জায়গা করে নেন শেষ আটে। তবে আগের আসরগুলোর দিকে চোখ বুলালে দেখা যায়—পুরো টুর্নামেন্ট দাপট দেখালেও সেমিফাইনালে এলে যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজতে থাকেন প্রোটিয়ারা। যার কারণে উপহাস করে তাদের ক্রিকেটের ‘চোকার্স’ ও বলা হয়।
এর আগে ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাঁচ বার ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মোট দুই বার সেমিফাইনাল খেললে একবারও খেলতে পারেননি ফাইনালে। তবে সেই দক্ষিণ আফ্রিকাই এবারের আসরের উড়তে থাকা আফগানদের সেমিতে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম বারের মতো কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে দলটি। তাই তো ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে মরিয়া প্রোটিয়া।
এদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পুরো আসর জুড়ে ছিল বৃষ্টির দাপট। সুপার এইট ও সেমিফাইনালের মতো ম্যাচেও ছিল এর চোখ রাঙানি। অনেক ম্যাচ তো শুরুও হয়েছে দেরিতে। তবে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রিজার্ভ ডে না রাখায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে বিশ্ব ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিকে। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ভারত-ইংল্যান্ডের ম্যাচও পড়েছিল বৃষ্টি বাধায়। সেসব কথা মাথায় রেখেই ফাইনালে রিজার্ভ ডে রেখেছে আইসিসি।
বেরসিক বৃষ্টির কারণে যদি আজ ম্যাচ মাঠে না গড়ায়, তাহলে আগামীকাল রবিবার রিজার্ভ ডেতে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল। যদিও শনিবার দেড় ঘণ্টা সময় রাখা হচ্ছে। বৃষ্টিতে ম্যাচ শুরু করা না গেলে বা ম্যাচ শুরু পর বৃষ্টি হলে এরপর আরও ৯০ মিনিট সময় থাকছে। অন্যান্য ম্যাচে ফলের ক্ষেত্রে অন্তত ১০ ওভার মাঠে গড়াতে হবে। তা-ও সম্ভব না হলে ম্যাচ যাবে রিজার্ভ ডেতে। আর যদি আজ ম্যাচ মাঝপথে থামে, রিজার্ভ ডে-তে সেখান থেকেই খেলা শুরু হবে। তবে বৃষ্টির কারণে শনি ও রবিবার খেলা না গড়ায় তাহলে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হবে।