বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিতে আফগানিস্তান

Spread the love

বাংলাদেশকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আফগানিস্তান। এর আগে বিশ্বকাপে কখনোই টাইগারদের হারাতে পারেনি আফগানরা। এবার শান্ত-সাকিবদের হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে তারা। আফগানিস্তানের এই জয়ে কপাল পুড়েছে অস্ট্রেলিয়ার।

মঙ্গলবার কিংস্টনে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান তুলে আফগানিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। ম্যাচের মাঝে বৃষ্টি হানা দিলে ডিএলএসে বাংলাদেশের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৯ ওভারে ১১৪ রানে। জবাবে খেলতে নেমে ১৭ ওভার ৫ বলে ১০৫ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

১১৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই নাভিন উল হককে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু করেন লিটন দাস। তবে পরের ওভারেই ফজল হক ফারুকিকে উইকেট দিয়েছেন তানজিদ তামিম। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে গুড লেংথে করেছিলেন ফারুকি। সেখানে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তানজিদ তামিম। ৩ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।
তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্তও। উইকেটে এসেই বড় শট খেলার চেষ্টা করেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে নাভিনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫ বলে ৫ রান।

পরের বলেই সাকিব আল হাসানকেও ফিরিয়েছেন নাভিন। চারে নেমে গোল্ডেন ডাক খেয়েছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। একাদশে ফেরা সৌম্য ভালো শুরু পেয়েও তা কাজে লাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ১০ বল খেলে করেছেন ১০ রান।

তাওহিদ হৃদয় উইকেটে এসে শুরু থেকেই বড় শট খেলার চেষ্টা করেছেন। তবে এদিন বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। রশিদের শিকার হওয়ার আগে ৯ বলে করেছেন ১৪ রান।

মাহমুদউল্লাহ যখন উইকেটে আসেন তখনও বাংলাদেশের সেমির সমীকরণ বাস্তব ছিল। ১৯ বলে যখন ৪৩ রান দরকার তখন দশম ওভারে ৫ বল ডট খেলেন মাহমুদউল্লাহ। সে ওভার থেকে আসে মাত্র ৪ রান। এতেই সেমির স্বপ্ন ম্লান হয় টাইগারদের। পরের ওভারে রশিদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। ৯ বল খেলে ৬ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। পরের বলেই রিশাদ হোসেনকেও ফেরান রশিদ।

সেমির সুযোগ নষ্ট করে ম্যাচ থেকেও ছিটকে যায় বাংলাদেশ। এক প্রান্তে লিটন দাস দাঁড়িয়ে থাকলেও আরেক প্রান্তে ছিল ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল। তাতে কোনোরকমে একশ পেরিয়ে অলআউট হয় টাইগাররা। লিটন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৫৪ রান করে।

এর আগে বোলিংয়ে দারুণ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। বিশেষ করে দুই পেসার তানজিম সাকিব ও তাসকিন আহমেদ শুরুতে ভালো সুইং পেয়েছেন। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাওয়ার প্লেতে রানের লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশ। তবে আফগানিস্তান কোনো উইকেট হারায়নি। দেখে-শুনে খেলার চেষ্টা করেছেন দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান।

ইনিংসের ৯ম ওভারে প্রথমবার আক্রমণে আসেন রিশাদ হোসেন। আর নিজেদের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে উইকেটের দেখা পেয়েছেন তিনি। ইব্রাহিমকে ফিরিয়ে আফগান শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন এই লেগ স্পিনার। ১৮ রান করে ইব্রাহিম ফেরায় ভাঙে ৫৯ রানের উদ্বোধনী জুটি।

তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি আজমতউল্লাহ ওমরজাই। মুস্তাফিজের বলে উইকেটের পেছনে ধরা পড়ার আগে ১২ বলে ১০ রান করেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার।

ধীরগতির ব্যাটিং করা গুরবাজ শেষ পর্যন্ত সাজ ঘরে ফেরেন রানের গতি বাড়াতে গিয়ে। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে রিশাদকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫৫ বলে ৪৩ রান। একই ওভারের চতুর্থ বলে গুলবাদিন নাইবকেও ফিরিয়েছেন রিশাদ।

এরপর মোহাম্মদ নবি-করিম জানাতরা চেষ্টা করেও রানের গতি বাড়াতে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে শেষ দিকে উইকেটে এসে ১০ বলে অপরাজিত ১৯ রানের ইনিংস খেলে আফগানদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছেন রশিদ খান। ডেথ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান। যদিও ২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইনিংসের সেরা বোলার রিশাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *