কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি ১৫ হাজার মানুষ

Spread the love

কুড়িগ্রামে তিস্তা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা নদীসহ ১৬টি নদীর পানি বেড়েই চলছে। এর মধ্যে ধরলা এবং তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে তিনটি উপজেলায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী এবং রাজারহাট উপজেলার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০ জুন, বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত ফুলবাড়ি উপজেলার তালুকশিমুল শেখ হাসিনা ২য় ধরলা সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি ১৬ সেন্টিমিটার ও কাউনিয়া রেল সেতু পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। বন্যার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে দেখা দিয়েছে নদনদীতে ব্যাপক ভাঙন।

স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের দেয়া তথ্য মতে নদীর পানি বাড়ার কারণে নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন সড়ক। ডুবে গেছে সবজি ক্ষেতসহ বিভিন্ন উঠতি ফসল।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, পানি বৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন জায়গায় প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় ৫/৬টি পয়েন্টে ভাংগন চলছে। সেখানে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে। জেলায় স্বল্পমেয়াদি এই বন্যা পরিস্থিতি দু-একদিনের মধ্যে উন্নতি হবার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চলতি বন্যায় জেলায় প্রায় ৪৫৩ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে মরিচ, আউশ ধান, পাট, চিনা, পটল খেতসহ অন্যান্য ফসল রয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, জেলার উপর দিয়ে ১৬টি নদী প্রবাহমান। এর মধ্যে ধরলা ও তিস্তা নদীর দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে ফলে রাজারহাট, নাগেশ্বরী ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার নীচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, দুর্যোগ কবলিত মানুষের সংখ্যা তিন হাজার ৬৯১ জন। উপজেলা পর্যায়ে ১৪৪ মে. টন জিআর চাল এবং নগদ ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ত্রাণ হিসাবে উপ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ৪০৪টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে দুর্গত মানুষ আশ্রয় নেয়া শুরু করেছেন। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে সরবরাহ করা হচ্ছে খাদ্য সহায়তা। ৪টি স্পিড বোট ও ২টি নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে বন্যার্তদের উদ্ধারের জন্য। জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

তিনি আরো বলেন, পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বন্যা কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের সহায়তায় স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *