টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইট পর্বে গ্রুপ ওয়ানের ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্রিজটাউনে শুরু হবে ম্যাচটি। সুপার এইটে উভয় দলের প্রথম ম্যাচ এটি।
অতীত পরিসংখ্যানের বিচারে ভারতের অবস্থা এক মেরুতে। ভিন্ন মেরুতে আফগানিস্তান। আট লড়াইয়ের সাতটিতে জয় ভারতের, একটি পরিত্যক্ত। বিশ্বকাপে একই অবস্থা। তিন ম্যাচের তিনটিতেই জয় ভারতের। পরিসংখ্যানের এমন অবস্থা সত্ত্বেও ভারত আফগানিস্তানকে মোটেও হালকাভাবে নিতে পারছে না। মূলত দিনে দিনে সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে আফগানিস্তান এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে কোনো দলই তাদের হালকাভাবে নেওয়ার দুঃসাহস দেখাচ্ছে না।
ব্রিজটাউনে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় মাঠে গড়াবে ম্যাচ। আফগানিস্তানকে হারাতে গেলে তিন চ্যালেঞ্জ সামলাতে হবে রোহিত শর্মাদের।
প্রথম চ্যালেঞ্জের নাম ফজলহক ফারুকি। চলতি বিশ্বকাপে ১২টি উইকেট নিয়েছেন এই আফগান বাঁহাতি পেসার। উইকেটশিকারিদের তালিকায় সকলের উপরে তিনি। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যাটারদের দুর্বলতা কারও অজানা নয়।
দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ আফগানিস্তানের অধিনায়ক, স্পিনার রশিদ খান। তার স্পিন কী সমস্যা করতে পারে, তা দেখেছে চলতি বিশ্বকাপ। নিউজ়িল্যান্ডকে হারাতে বড় ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। ভারতের বিরুদ্ধে খেলার অভিজ্ঞতা প্রচুর। রোহিত, বিরাট, সূর্যকুমার, হার্দিকদের শক্তি, দুর্বলতা জানেন।
তৃতীয় চ্যালেঞ্জ ওপেনার রহমানুল্লা গুরবাজ। গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচে বিধ্বংসী ব্যাট করেছেন। ভারতীয় পেসারদের বিরুদ্ধে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। গুরবাজ় যদি ভাল শুরু করতে পারেন, তা হলে বড় রান করতে পারে আফগানিস্তান।
রোহিত শর্মার নেতৃত্বে ভারত বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে শতভাগ জয় পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও আয়ারল্যান্ডের পাশাাপাশি চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারিয়েছে তারা। কানাডার বিপক্ষে তাদের ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়েছিল। আফগানিস্তানের তাদের গ্রুপ থেকে যেভাবে সুপার এইটে উঠে এসেছে তাতে করে ভারতের জন্য তারা কঠিন প্রতিপক্ষ হয়ে দেখা দিতে পারে। তারা টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে।
আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় সুবিধা আইপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা। প্রথম একাদশের সবাই আইপিএলে কোনও না কোনও দলের হয়ে খেলেন। তাই ভারতের ক্রিকেটারদের ভাল ভাবে চেনেন তারা। ভারতের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা করতে সুবিধা হবে আফগানদের। একই সুবিধা অবশ্য পাবে ভারতীয় দলও। রশিদ, নবীন উল হকেরা এখন অপরিচিত নন। তাদের শক্তি, দুর্বলতাও রোহিতরা জানেন।
আফগানিস্তান তাদের গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলো ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলেছে। অন্যদিকে ভারত খেলেছে যুক্তরাষ্ট্রে। ভারত প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলবে। ফলে তাদের তুলনায় আফগানিস্তান একটু বেশিই সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে। আফগানিস্তানের বোলাররা একটু বেশি সুবিধা পেতে পারে। ফলে আফগানিস্তানের বোলিং বনাম ভারতের ব্যাটিং হতে পারে এ লড়াইটি।
আফগানিস্তান প্রতি ওভারেই ভারতে ব্যাটিং লাইনের পরীক্ষা নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাফল্য পেতে রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে আগেভাগে আউট করতে হবে।
রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং অক্ষর প্যাটেলের মধ্যে লড়াইটা বেশ জমজমাট হয়ে দেখা যেতে পারে। ভালো মানের বোলিংয়ের বিপক্ষে রান করার জন্য দক্ষতার পাশাপাশি সাহস থাকা দরকার। সেই সাহসটা রয়েছে গুরবাজের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৬ বলে ৮০ রান করেছিলেন। পেস বোলারের বিপক্ষে তার স্ট্রাইক রেট ১৫০ আর স্পিনের বিপক্ষে ১৪৫।
ভারতের কাছে আরও এক চ্যালেঞ্জ ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের পিচ বোঝা। চলতি বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বে নিজেদের সব ম্যাচ নিউইয়র্কে খেলেছেন রোহিতরা। কিন্তু আফগানিস্তান তাদের সব ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ে খেলেছে। তাই রোহিতদের থেকে রশিদরা সেখানকার পরিবেশ ভাল জানেন।