দুঃসহ গরমে পুড়ছে ভারত। গত ৭২ ঘণ্টায় দিল্লি ও নয়ডায় হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। এরমধ্যে দিল্লিতে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের এবং গত ২৪ ঘণ্টায় নয়ডায় মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের।
দিল্লিতে আরও বেশ কয়েকদিন তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। ফলে এই অবস্থায় সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন।
জানা গেছে, দিল্লির সফদরজং হাসপাতাল ও রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে দুজন করে এবং লোক নায়ক হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সব ক্ষেত্রেই মৃত্যুর কারণ হিসেবে হিটস্ট্রোক উল্লেখ করা হয়েছে।
রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, প্রতিদিন হাসপাতালটিতে ৮ থেকে ১০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন, যারা প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সেক্ষেত্রে গুরুতর অসুস্থদের ভর্তি করা হচ্ছে আইসিইউতে। হাসপাতালে মোট চারজন আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। তার মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
মূলত যাদের উচ্চচাপ বেশি এবং বয়স্ক অথবা ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে, সেই ধরনের রোগীরাই গরমে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
গুরুগ্রামের সি কে বিড়লা হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে দুজন রোগী ভর্তি হচ্ছেন, যারা গরমের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. তুষার তায়াল জানান, মূলত ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগে আক্রান্ত বয়স্ক ব্যক্তিরা গরম সহ্য করতে পারছেন না। তাদেরকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে।
হিটস্ট্রোকের যে সমস্ত লক্ষণগুলো দেখা দিচ্ছে, সেগুলো হলো- প্রচুর ঘাম, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, মাথা ঘোরা, মাথা ব্যথা, পেশিতে দুর্বলতা, বমি বমি ভাব প্রভৃতি। সাধারণত গরমে ক্লান্তিতে অসুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে সময় লাগে এক থেকে দুদিন।
এদিকে বসন্ত কুঞ্জের ফর্টিস হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১০ জন হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীকে ভর্তি করা হচ্ছে। যাদের মধ্যে অনেকের শরীরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ওপরে চলে গেছে।
ভারতে গত কয়েকদিন ধরে তাপপ্রবাহ চলছে। সোমবার দিল্লির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৬.৪ ডিগ্রি বেশি।
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, এমন তাপপ্রবাহের অবস্থা বেশ কয়েকদিন জারি থাকবে দিল্লিতে। এ অবস্থায় প্রশাসনের তরফে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শারীরিকভাবে দুর্বল এবং বয়স্ক নাগরিকদের বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। সূত্র- হিন্দুস্তান টাইমস।