মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পাল্টা জবাবে ডলার-ইউরোর লেনদেন বন্ধ করল রাশিয়া

Spread the love

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন চালানোর ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। পাল্টা জবাবে ডলার ও ইউরোর লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়ার প্রধান শেয়ার ও মুদ্রাবাজার মস্কো এক্সচেঞ্জ
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ডলার এবং ইউরোতে লেনদেন স্থগিত রাখে মস্কো এক্সচেঞ্জ।
যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে রাশিয়ার ওপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার একদিন পরই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে সর্বশেষ এসব নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বুধবার ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় যে মস্কো এক্সচেঞ্জের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এটি কেবল রাশিয়ার প্রধান শেয়ার ও মুদ্রাবাজারই নয়; বরং একই সঙ্গে মস্কো এক্সচেঞ্জ বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের নিকাশঘর হিসেবেও কাজ করে। সে কারণে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে একটি বড় আর্থিক শাস্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রাশিয়ার মস্কো এক্সচেঞ্জের বরাতে এক প্রতিবেদনে মস্কো টাইমস জানিয়েছে, ‘মস্কো এক্সচেঞ্জ গ্রুপের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞার কারণে ১৩ জুন থেকে মার্কিন ডলার ও ইউরো বাদে বাজারে লেনদেন পরিচালিত হবে।
আরো বলা হয়েছে, নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মস্কো এক্সচেঞ্জ তাদের ক্লায়েন্টদের ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের সমস্ত বিভাগে অ্যাক্সেস দেবে।
রাশিয়ায় বৈদেশিক মুদ্রা কেনা এবং এর লেনদেন করার সক্ষমতাকে লক্ষ্য করে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হলে সাধারণত দেশটির সরকার ও পুরো রুশ সমাজে শক্ত প্রতিক্রিয়া হয়।
রাশিয়ার অর্থনীতি কেমন করছে, তার একটি প্রধান সূচক হলো মুদ্রার বিনিময় হার। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরের তিন দশকে দেশটির মুদ্রা রুবলের অনেকবার অবমূল্যায়ন হয়েছে। এ নিয়ে রুশ সমাজে ভয় রয়েছে। ফলে অনেক রুশ নাগরিক পশ্চিমা মুদ্রায় তাঁদের অর্থ সঞ্চয় করতে পছন্দ করেন। আর অর্থনৈতিক সংকটের সময় তারা রুবল বিক্রি করে দেন।
নতুন দফার নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর বুধবার সন্ধ্যায় রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক খুব দ্রুত উত্তেজনা প্রশমিত করতে ব্যবস্থা নেয়।
ব্যাংকের বিবৃতিতে বলা হয়, মস্কো এক্সচেঞ্জ গ্রুপের বিপক্ষে নেয়া যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপের কারণে মার্কিন ডলার ও ইউরোভিত্তিক সম্পদের লেনদেন ও নিষ্পত্তি স্থগিত থাকবে। যেকোনো কোম্পানি বা ব্যক্তি রাশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে মার্কিন ডলার ও ইউরো কিনতে বা বিক্রি করতে পারবেন। নিজস্ব হিসাবে যদি কারও ডলার থাকে, তাহলে তা নিরাপদ থাকবে।
রুশরা অবশ্য মস্কো এক্সচেঞ্জের আওতার বাইরের যেকোনো ব্যবস্থা ব্যবহার করে ডলার ও ইউরো কেনাবেচা করতে পারবেন। তবে এতে করে তারল্যের ঘাটতি এবং দামের খুব বেশি হেরফের হতে পারে।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর বেশির ভাগ রুশ কোম্পানি ও ব্যাংক ইতিমধ্যেই পশ্চিমা মুদ্রার ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়েছে। মস্কো এক্সচেঞ্জে এখন যত বিদেশি মুদ্রার লেনদেন হয়, তার বেশির ভাগই চীনা মুদ্রা ইউয়ান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *